অস্ত্র সমর্পণ করলেই ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা: রাশিয়া

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করলেই কেবল কিয়েভের সঙ্গে আলোচনায় মস্কো প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, নব্য-নাৎসিরা ইউক্রেন শাসন করুক মস্কো তা চায় না। শুক্রবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রুশ সৈন্যদের প্রবেশের পর এসব কথা বলেছেন তিনি।

সের্গেই লাভরভ আরও দাবি করেছেন যে, রাশিয়া চায় ইউক্রেনের জনগণ স্বাধীন হোক এবং স্বাধীনভাবে তাদের ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ থাকুক। তবে প্রতিবেশী এই দেশটি নব্য-নাৎসিদের শাসনে চলুক সেটি ক্রেমলিন কখনই চায় না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

রাশিয়ার এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনের বর্তমান সরকারকে গণতান্ত্রিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছে না মস্কো।

এদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে শুরু হওয়া আগ্রাসনের দ্বিতীয় দিনে রাশিয়ার সৈন্যরা কিয়েভে পৌঁছেছে। শুক্রবার ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক টুইট বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, রুশ সৈন্যরা এখন কিয়েভে। তবে ইউক্রেনের সৈন্যরা রুশ দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তুমুল লড়াই গড়ে তুলেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেইজে দেওয়া এক পোস্টে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, রাজধানীর উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। রুশ সৈন্যদের কিয়েভে প্রবেশ ঠেকাতে উত্তরপশ্চিমের টেটেরিভ নদীর সীমান্ত এলাকার একটি সেতু ধ্বংস করে দিয়েছে ইউক্রেনের সৈন্যরা।

মন্ত্রণালয় বলছে, শত্রুরা এখন কিয়েভের ওবোলোন জেলায় পৌঁছেছে। রাজধানী কিয়েভের সংসদ ভবন এলাকা থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ওবোলোন শহর। দেশটির কর্মকর্তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের পাল্টা লড়াইয়ের জন্য মোলোটোভ ককটেল তৈরি করতে উৎসাহ এবং অন্যদের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

টুইটে শান্তিকামী বাসিন্দাদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে বাড়ি না ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, আমরা নাগরিকদের সামরিক যান চলাচলের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি। মোটলোভ ককটেল তৈরি করুন, দখলদারদের প্রতিহত করুন।

বিবিসির প্রতিনিধিরা শুক্রবার সকালের দিকে কিয়েভে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, এই মুহূর্তে  গোলাগুলি কেন তা জানা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারা এখন প্রকট বিস্ফোরণ শুনতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে, রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠের ডাইমার এবং ইভানকিভ শহরে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে। সেখানে রাশিয়ার বেশ কিছু সাঁজোয়া যান অগ্রসর হতে দেখা গেছে। এদিকে, গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছেন, ইউক্রেনে পাল্টা প্রতিরোধে রাশিয়ার অন্তত ৪৫০ সৈন্য নিহত হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন